যুব বিচিত্রা প্রতিনিধি, শিলচর ১৪ জানুয়ারি: প্রকৃতির রুদ্ররূপে শঙ্কিত প্রকৃতিপ্রেমীরা। চারিদিকে যে ভাবে আধুনিকতার বন্যা চলে। প্রয়োজনের খাতিরে আধুনিকতা সকলে চায়। প্রশ্ন হলো, প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রকৃতির বিনষ্ট না করে শিল্পায়ন বা আধুনিকিকরণ করা হচ্ছে কি? দেখা যায়,পাহাড়-টিলা-টক্করের সবুজায়নের চিত্রটা যেন মাটি কাটায় হারিয়ে যেতে চলেছে ।কয়েক বছর থেকে বর্ষাকালে অতিবৃষ্টিতে বন্যায় ভয়ংকর ছবি মেঘালয়,বরাকউপত্যকা ও ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় দেখা গিয়েছিল ।বন্যার তাণ্ডবে ত্রিপুরা,মিজোরাম ও মনিপুরের রাজ্য থেকে সড়ক ও রেলপথে বরাক উপত্যকা হয়ে যাতায়াতকারীদের যাওয়া পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল ।তখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে জনজীবন বিপন্নের মুখে পড়েছে । এমনকি, বহিঃ রাজ্যে যাতায়াত ব্যবস্থা বরাকের একমাত্র (কুম্ভিরগ্রাম) শিলচর বিমান সেবাই হাতে থাকে।
পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার জন্যই ভুগতে হচ্ছে আজ। বিধ্বস্ত বরাক তথা ডিমাহাসাও আর সঙ্গে মেঘালয়ের পাহাড়,টিলা-টক্কর নদী,নালায় অব্যাহত ধস পতন লেগেই থেকে ধারাবাহিক বৃষ্টি ধারায়।যার কারণ ই হলো অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অপপ্রয়োগ। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয় ।
অরণ্যে থেকে গাছ-পালা আর চিরসবুজ জোপঝাপড়া হারিয়ে যাওয়ার জন্যই কি ভূমিস্খলনের আমনাসামনা করতে হয় ?পাহাড়, টিলাটক্কর থেকে বালু,মাটি, পাথর,নুড়ি জলের প্লাবনে নেমে এসেছিল পাহাড় লাইনে রেলট্রেক ও বিভিন্ন জায়গা ধসের তলে গতবছর । একেই অবস্থা শিলচর-হাফলং ও মেঘালয়ের মটর সড়কেরও ছিল । গাছপালা ও সবুজগাছের শিখর দিয়ে মাটিকে ধরে রাখার ধরন নষ্ট হচ্ছে । পরিবেশ সচেতকরা তাই মনে করেন।


ফলে বনসংরক্ষণের জন্য অরণ্যের গাছপালা ও পশুপাখি ও কীট-প্রতঙ্গের বিচরণ ভূমি কমেছে । পরিবেশ রক্ষণ না করার ফলে বীভৎস পরিবেশের সৃষ্টি। অনেকেই তাই মনে করছেন । আর এই জীবকুল আর সবুজায়ন পরিবেশ মানব কল্যাণের স্বার্থে রক্ষণ দরকার বলে উক্তি শুনতে পাওয়া যায় । আমরা কতটুকু প্রকৃতির নিয়মের বাহিরে চলি না কেন, আমরা নিজের পায়ে নিজ কুড়াল মারছি।বর্তমানে যে চিরসবুজের গাছ-পালার জটলা ও বনজ সম্পদের ভরপুর আসাম। তা নিয়ে আমরা গর্বিত এককালে হতাম। বৃটিশ কতৃক নির্মাণ করে যাওয়া পরিকল্পনা সমূহের আসামের বনভূমির মান বিশ্বের অন্যতম ছিল এককালে । আজ তা যোগবিয়োগ করে কতটুকু দেখছি । স্বাধীনতার পরবর্তীকালে এ বনভূমিতে আরম্ভ হয় নিষ্ঠুর আঘাত। সময়ে সময়ে বনভূমির উপর মানুষের অত্যাচার চরম সীমায় পৌঁছে। অবৈধ দখলকারীগণ অনেক অরণ্যকে কৃষিভূমিতে রূপান্তরিত করেছে। তার উপর চোরাব্যবসায়ীদের ও অবৈজ্ঞানিক আধুনিক কুড়ালের আঘাতে আহত বনভূমি।জনস্ফীতি বা উদ্যোগীকরণ-এর দরুন বনভূমি বিস্তর ক্ষতি সাধন করেছে অবৈজ্ঞানিক চলনে। তবে প্রয়োজনের তাগিদে পরিবেশের সংসারজীবন সংরক্ষণ ও প্রয়োজনের তাগিদে বৈজ্ঞানিক ভাবে আধুনিকরণ করা চাই। তবে হয়তো এই ভাবে প্রকৃতি কটুরতা দেখাতো না ফেলে আসা দিনগুলোর মতো।এই নিয়ে কতটুকু ভাবছেন পরিবেশ বৈজ্ঞানিকরা! প্রবলভাবে বৃষ্টির ধারাবাহিকতা প্রায় মাস কয়েকটি সাপ্তাহিক লেগে থাকলেই মটর ও রেলওয়ে লাইন বন্ধ হলে জনজীবন বিপন্ন হয় বরাক সহ পার্শ্ববর্তী রাজ্যের। বদরপুর-লামড়িং রেলওয়ে সেকশন পাহাড়ি থেকে নামা জলস্রোতে তচনছ, বিভিন্ন জায়গায় হয় ল্যাণ্ড স্লাইড। তাছাড়া সড়ক শিলচর লামডিং ও বরাক থাকে বেরিয়ে যাওয়ার মেঘালয়ের পথের অবস্থা তথৈবচ। একমাত্র শিলচর কুম্ভিরগ্রাম বিমান সেবার কল্যানে কিছুটা যাত্রায়াতের পথ খুলা থাকে । রেলওয়ে পাহাড়লাইনের প্রবল বৃষ্টির মাঝে চলছে রেলওয়ে পথ ঠিক করার কাজ।হিমশিম খাচ্ছেন রেলওয়ে কর্মী সহ রেলওয়ে লাইন বসানো সহকর্মীরা পযর্ন্ত ।
পুরোনো পাহাড়ের চিত্র বদলাচ্ছে। সবুজ হারাছে।পাহাড়ি এলাকায় উত্তর -পূর্ব ভারতের মধ্যে অসম রাজ্য। বনভূমিগুলো গাছ-পালা নিয়ে সবুজায়নের ঘেরাটুপে বনও বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যময় ছিল। তা নিয়ে আমাদের সহবাস ছিল। আজও কিন্তু আগের মতো অরণ্যর সমাদরটুক কতটুকু যত্ন করে রাখার প্রচেষ্টা আমরা করতে পাচ্ছি? পশুপাখি,বিভিন্ন জাতের কীট-পতঙ্গ,বুনো বিভিন্ন রকমের দেখা কতটুকু দেখা পাই। বন ও বৈন্যপ্রাণী বৈচিত্র্যের অপুর্ব সম্ভার রহেছে বরাকের অভয়ারণ্যের আয়তন অনুযায়ী সংরক্ষণ। বড়াইল নামে অভায়রণ্যটি বরাকের বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণে আছে বৈকি? না শুধু খাতা কলমে ই সীমাবদ্ধ অভয়ারণ্য বড়াইল??