কাতিরাইল পোস্ট অফিস বন্ধ করে দেওয়ায় উত্তপ্ত গোটা এলাকা, ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা!

শিলাদিত্য পাল, কাটিগড়া, ২৩ আগস্ট :- কাটিগড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কাতিরাইল পোস্ট অফিস হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। সম্প্রতি, স্থানীয়রা প্রতিদিনের মতো পোস্ট অফিসে নানা কাজে আসেন। কিন্তু গিয়ে দেখেন প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা। দেওয়ালে টাঙানো একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে- ‘লেনদেনের জন্য কাটিগড়া এসও অথবা নিকটবর্তী অন্য ডাকঘরে যান।’

ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় নেমে আসে চাঞ্চল্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডাক বিভাগের কাছাড় ডিভিশনের সুপারিন্টেনডেন্টের নির্দেশে কাতিরাইল পোস্ট অফিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাটিগড়া পোস্ট অফিসের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। এর ফলে কাতিরাইল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার সহ অন্যান্য কর্মচারীদের কাটিগড়া পোস্ট অফিসে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডাক বিভাগের এমন সিদ্ধান্তে হতচকিত হয়ে পড়েন গ্রামবাসী। এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে পড়েন স্থানীয় মানুষজন। তাদের অভিযোগ, কোনও প্রকার পূর্ব ঘোষণা বা আলোচনাই করা হয়নি। এর ফলে সাধারণ মানুষকে দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালেই কয়েকশো মানুষ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কাতিরাইল পোস্ট অফিস প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাদের একটাই স্লোগান- যে করেই হোক কাতিরাইল পোস্ট অফিস বহাল রাখতে হবে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, কাতিরাইল পোস্ট অফিসের হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে এই অঞ্চলের কয়েক হাজার

মানুষের জীবনযাত্রা আরও জটিল হয়ে পড়বে। চিঠিপত্র, ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, এলপিজি সাবসিডি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা এখন অনেকের নাগালের বাইরে চলে যাবে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, আচমকাই আমাদের ঠিকানা পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে, তাহা কোনওভাবেই মেনে নেবেন না জনগণ। কাতিরাইল পোস্ট অফিস বহাল রাখা না হলে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে। এই দাবিতে অনড় রয়েছেন কাতিরাইল, সিদ্ধিপুর, নুননগর, মোহনপুর ও সিদ্ধেশ্বর গ্রামের বাসিন্দারা। তারা ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে শিলচরের সাংসদ পরিমল শুক্লবৈদ্য এবং রাজ্যসভার সাংসদ কণাদ পুরকায়স্থের আশু হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। এদিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বিজেপির কিষান মোর্চার কাটিগড়া মণ্ডল সভাপতি দেবজ্যেতি চৌধুরী বলেন, গ্রামীণ মানুষদের স্বার্থে কাতিরাইল পোস্ট অফিস পুনরায় চালু করতেই হবে। এই বিষয়ে আমরা সর্বস্তরের জনমত তৈরি করবো। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সুব্রত আচার্য, সঞ্জীব মালাকার, অসীম দেব (বাপ্পা), দিজেন্দ্র দাস, সুজিত নাথ লস্কর, জাবির হুসেন বড়ভুঁইয়া, ফজল আহমেদ, বিরাজ ভট্টাচার্য প্রমুখ। সকলেই একবাক্যে ডাক বিভাগের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পোস্ট অফিস পুনরায় চালুর দাবি তোলেন। কাতিরাইল পোস্ট অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। ডাক বিভাগের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন স্থানীয়রা। গ্রামীণ মানুষের দাবি পূরণে ডাক বিভাগ ও প্রশাসন কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, এখন এটাই দেখার বিষয়।