চরম নোংরা রাজনীতির শিকার শ্রেয়স! প্রাক্তন কোচের বিবৃতিতে বিস্ফোরণ, বিসিসিআইকে ধুয়ে দিলেন প্রাক্তনরা!

সংবাদ সংস্থা, ২১ আগস্ট :- শ্রেয়স আইয়ার বাদ পড়তেই প্রাক্তন তারকারা রে রে করে তেড়ে উঠেছেন। আর প্রাক্তন কোচের বিস্ফোরক বিবৃতিতে ফুটে উঠল নোংরা রাজনীতির প্রশ্ন!

অজিত আগরকরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় নির্বাচক কমিটি এশিয়া কাপের দল বেছে নিয়েছে। ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষিত হওয়ার পরেই নেটপাড়া জ্বলছে ক্ষোভের দাবানালে। একাধিক নক্ষত্রকে বাদ দিয়েই চমকে দেওয়ার মতো দল বেছে নেওয়া হয়েছে। যশস্বী জয়সওয়াল, শ্রেয়স আইয়ার, সাই সুদর্শন, কেএল রাহুল, অক্ষর প্যাটেল, ওয়াশিংটন সুন্দর, প্রসিধ কৃষ্ণা ও মহম্মদ সিরাজের মতো ক্রিকেটারদের ভাবাই হল না! রবি বিষ্ণোইও বাদ পড়েছেন দল থেকে। নেটপাড়ায় এখন চর্চায় শ্রেয়স, সকলে এটা ভেবেই হতবাক হচ্ছেন যে, সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েও কী

করে শ্রেয়স বাদ পড়তে পারেন! দল নির্বাচনের পর আগরকর বলেছেন, ‘দেখুন দলে জায়গা না পাওয়ায় শ্রেয়সের কোনও দোষ নেই। আমাকে বলুন যে, ও কার জায়গায় আসবে? আমরা মাত্র ১৫ জনকেই বেছে নিতে পারব। এই মুহূর্তে ওকে সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’ শ্রেয়সকে বাদ দেওয়া মেনে নিতে পারছেন না হরভজন সিং ও ইরফান পাঠানের মতো বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। আর নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন ক্রিকেটার অভিষেক নায়ারও। যিনি কিছুদিন আগেও গৌতম গম্ভীরের সাপোর্ট স্টাফ টিমে ছিলেন। আকাশ চোপড়াও মুখ

খুলেছেন। ২০২৩ থেকে শ্রেয়স দেশের জার্সিতে ক্ষুদ্রতম সংস্করণে খেলেননি। বিগত দুই মরসুমে শ্রেয়সের টি-টোয়েন্টি রেকর্ড চমকে দেওয়ার মতো। পঞ্জাব কিংসের হয়ে চলতি আইপিএলে প্রীতি জিন্টার দলের অধিনায়ক আলো ছড়িয়েছেন। ১৭৫.০৭-এর স্ট্রাইক রেটে ৬০৪ রান করেছিলেন ৫০.৩৩- এর গড়ে। স্পিনের বিরুদ্ধে তাঁর আধিপত্য ছিল দেখার মতো। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট এবং ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে সোনালি দৌড়ে ছিলেন তিনি। বিগত দু’বছরে, তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সকে আইপিএল খেতাব জিতিয়েছেন ২০২৪ সালে। সৈয়দ মুসতাক আলি

ট্রফিতে মুম্বইকে জিতিয়েছেন। সোবো মুম্বই ফ্যালকনসকে মুম্বই টি-টোয়েন্টি লিগের ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবার আইপিএলে প্রথমবার পঞ্জাবের দায়িত্ব নিয়েই ফাইনালে তুলেছেন। তাঁর সাফল্য শুধু সাদা বলের ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ২০২৩-২৪ সালে মুম্বইয়ের রঞ্জি ট্রফি জয়ের অংশ ছিলেন। তারপরে ইরানি কাপ জিতেছিলেন। চলতি বছরের শুরুতে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতাতেও রেখেছেন অবদান। মিডল অর্ডারের আগুনে ব্যাটার হয়েও কীভাবে শ্রেয়সকে গৌতম গম্ভীর বাদ দিতে পারেন, তা বুঝতেই পারছেন না সমর্থকরা। আইয়ারের শেষ টি-

টোয়েন্টিআই ইনিংস ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বেঙ্গালুরুতে। কঠিন পরিস্থিতিতে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন তিনি। স্টার স্পোর্টসকে নায়ার বলেছেন, ‘ আমি জানি না শ্রেয়স কীভাবে বাদ পড়ল, আসলে আমিও প্রশ্নটিই জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিলাম। আপনাদের বেছে নেওয়া রিজার্ভ খেলোয়াড়দের তালিকাতেও শ্রেয়স নেই, যদি ও এতই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে থাকে! কখনও-কখনও দল নির্বাচনের বৈঠক এবং সেখানকার আলোচনাও খুব আকর্ষণীয় হতে পারে। শ্রেয়সকে ২০ সদস্যের দলে না রাখার যুক্তিই খুঁজে পাচ্ছি না। আমি ১৫

সদস্যের দল সম্পর্কেও বলছি না, আমি ২০ সদস্যের দল সম্পর্কেও বলছি, যা শ্রেয়সকে একটি বার্তা পাঠায় যে, সে দলের পরিকল্পনায় নেই। কারণ যদি সবকিছু ঠিকঠাক নাও হয়, তবুও সে দলে আসছে না। হয় রিয়ান পরাগ দলে আসবেন, নয়তো অন্য কেউ! এখানে বড় প্রশ্ন হল, নির্বাচকরা হয়তো তাঁকে টি-টোয়েন্টি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেনই না! অথবা হয়তো অন্য কোনও দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। কিন্তু আমি সবসময় বলি যে, নির্বাচনের অর্থই হলো- আপনি কাকে অন্যের চেয়ে একটু বেশি পছন্দ করেন। সেই দিক থেকে, হয়তো শ্রেয়সকে অন্য কারোর মতো

পছন্দ করা হয় না।’ ২০২৪ সালের জুলাই। টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ গম্ভীরের সুপারিশেই, কলকাতা নাইট রাইডার্স ছেড়ে অভিজ্ঞ নায়ার ঢুকেছিলেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের সাজঘরে। ৯ মাসের মাথায় নায়ারকে সহকারি কোচের পদ থেকে ছাঁটাই করে বিসিসিআই! তবে একদিনও তাঁকে বেকার বসতে হয়নি বাড়িতে! যে কেকেআর ছেড়ে নায়ার টিম ইন্ডিয়ার জার্সি গায়ে চাপিয়ে ছিলেন, সেই কেকেআর-ই তাঁকে পুণরায় নিয়োগ করেছে সাপোর্ট স্টাফ হিসেবে। ‘আপনি যদি শ্রেয়স আইয়ারে ভক্ত হন, তাহলে আজ আপনি প্রতারিত হয়েছেন। শ্রেয়স এশিয়া

কাপে ভারতীয় দলের অংশ হওয়ার জন্য সবকিছু করেছিল। পিবিকেএসকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে বিজয় হাজারে ট্রফি এবং সৈয়দ মুসতাক আলি ট্রফিতে আধিপত্য বিস্তার এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের সেরা ব্যাটার হিসেবে আবির্ভূত হওয়া, আইয়ার সবকিছুই করেছেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও সে নির্বাচিত হননি। শ্রেয়সকে ব্যাটার হিসেবে দলে আনা যাবে না কারণ ভারতের নিশ্চিত খেলোয়াড়রা ৩ এবং ৪ নম্বর স্থানে রয়েছে, যার অর্থ হল আইয়ারকে ৫ নম্বরে পাঠানো হবে, যা মিডল-অর্ডার ব্যাটারের জন্য সম্ভাব্য ভূমিকা বলে মনে হচ্ছে না! ভাজ্জি

ইউটিউব চ্যানেলে বলেছেন, আমি আশা করেছিলাম যে, শ্রেয়স দলে জায়গা পাবে। ও প্রচুর রান করেছে, আইপিএল ফাইনালে খেলেছে এবং খুব ভালো ফর্মে ছিল। আমার মনে হয়েছিল তার নামও থাকবে। সে কার জায়গা নেবে সেটা দেখতে হবে। যখন কাউকে অন্তর্ভুক্ত করতে হয় বা বাদ দিতে হয়, তখন একটা জায়গা করে নেওয়া হয়। কিন্তু আমি শ্রেয়সের আইয়ারের নাম দেখতে না পেয়ে অবাকই হয়েছি। হরভজন আরও বলেছেন, ‘আমার মনে হয় সিরাজের নামও থাকা উচিত ছিল। সাম্প্রতিক সিরিজে সিরাজ খুব ভালো বোলিং করেছে। হ্যাঁ, ইংল্যান্ডে সে অনেক বোলিং

করেছে, কিন্তু পর্যাপ্ত বিশ্রামও পেয়েছে। তাই তাকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতেই পারত। যদি তাকে নেওয়া হত, তাহলে দল আরও শক্তিশালী হত। বোলিং ইউনিট আরও শক্তিশালী দেখাত। আমার মনে হয় সিরাজ না থাকায় ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ মিস করবে ভারত।’ ইরফান তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘আমার মনে কোনও সন্দেহই নেই যে, ও কেবল টি-

টোয়েন্টি দলেই থাকবে না, বরং নেতৃত্ব দলেরও অংশ হবে। এই মুহূর্তে ধৈর্যই ওর মূল চাবিকাঠি।’ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের সাম্প্রতিক টেস্ট সিরিজ নায়ক ছিলে মহম্মদ সিরাজ। তিনিও বাদ। এবার আইপিএলে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন সিরাজ। জসপ্রীত বুমরার সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি গড়ে তোলার ক্ষমতা রাখা সিরাজ দলের বড় সম্পদ হতে পারতেন।