সংবাদ সংস্থা, ২১ আগস্ট :- Diamond Harbour vs East Bengal :- অঘটন! ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ডুরান্ড ফাইনালে ডায়মন্ড হারবার এফসি। প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল নক্ষত্রের গোলেই মশালবাহিনী ছিটকে গেল ডুরান্ড থেকে।
উল্লেখ্য,বিগত তিন বছরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লাব ডায়মন্ড হারবার এফসি, ভারতীয় ফুটবলে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। এশিয়ার প্রাচীনতম টুর্নামেন্ট ও বিশ্বের তৃতীয় প্রাচীন ফুটবল টুর্নামেন্ট ডুরান্ড কাপে এইবারই প্রথম পা রেখেছে কিবু ভিকুনার দল। আর অভিষেকেই ফাইনালে চলে গেল ডায়মন্ড হারবার। অভিষেককারী ক্লাব শতাব্দী প্রাচীন ইস্টবেঙ্গলকে ২-১ হারিয়ে তাদের জয়ের রথ বসিয়ে দিল! আগামী শনিবার নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলবে তারা, প্রতিপক্ষ দল ব্যাক-টু-ব্যাক ফাইনালে উঠেছে।
প্রথমার্ধ :-
বুধের তিলোত্তমার আবহাওয়া সারাদিনই ছিল কখনও মেঘ তো কখনও বৃষ্টি। ঠিক তেমনই ছিল সেমি যুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল-ডায়মন্ড হারবারের| একেবারে ৩০ সেকেন্ড থেকে শুরু করে ৪৫+২ পর্যন্ত কখনও লাল-হলুদ তো কখনও লাল-নীল। দু’দলই পেয়েছিল গোল করার একাধিক সুযোগ, সঙ্গে জুড়েছিল দুর্ভাগ্যও। খেলার তিরিশ সেকেন্ডের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের ইতালিয়ান ডিফেন্ডার কেভিন সিবিলি আর গোলরক্ষক প্রভসুখন গিলের ভুল বোঝাবুঝিতে ডায়মন্ড হারবার প্রায় প্রথম গোলের দেখা পেয়েই যাচ্ছিল। ১৫ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল পেয়ে গিয়েছিল পজিটিভ চান্স। মিগুয়েলের দূরপাল্লার শট বাইরে চলে গিয়েছিল। এরপর ২৪ মিনিটে ডায়মন্ড হারবারের স্যামুয়েলের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ঠিক এই ঘটনার তিন মিনিটের মাথায় অধিনায়ক জবি জাস্টিনও পেয়েছিলেন গোলের সুযোগ! এরপর বিরতির আগে দিমিত্রিওস দিয়ামানটাকোসের গোলমুখী হেড পথভ্রষ্ট হয়।এরপর ইঞ্জুরি টাইমে মহেশের বুলেট শট ডায়মন্ড হারবারের গোলকিপার মিরশাদ মিচুর হাতে লেগে প্রতিহত হয়ে ফিরে আসতেই মিগুয়েল শট নিয়েছিলেন। তবে গোল আর আসেনি। সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই হলেও ইস্টবেঙ্গলের আধিপত্য ছিল তুলনামূলক বেশি। যেভাবে অস্কার ব্রুজোর শিষ্যরা কিবু ভিকুনাদের বক্সে বারবার ঢুকে পড়েছিলেন, সেখানে দাঁড়িয়ে ইস্টবেঙ্গলের একটা হলেও গোল করা উচিত ছিল লাক ফ্যাক্টর বাদ দিলেও:
দ্বিতীয়ার্ধ :-
বিরতির পর ফিরে এসে ইস্টবেঙ্গল গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ৫০ মিনিটে দিয়ামানটাকোসের ঠিকানা লেখা হেডের শটও ফিরে আসে! তবে ৬৬ মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পেয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মিকেল কোর্তাজার সকলকে চমকে দিয়ে চকিতে বিশ্বমানের বাইসাইকেল কিকে বিশ্বমানের গোলে চমকে দেন। তবে গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই খেলা ঘুরে যায়। প্রায় মাঝমাঠ থেকে আনোয়ারের মিসাইল শটে ইস্টবেঙ্গল গোল হজম করার এক মিনিটের মধ্যে শোধ করে যুবভারতীকে সেলিব্রেশনে মাতিয়ে দেয়। ডায়মন্ড হারবারও যে ছাড়বার পাত্র নয়। লড়াই করে তারাও এই মঞ্চে এসেছে। হাড্ডাহাডি লড়াই যখন চরমে, তখন ম্যাচের বয়স ৮৩ মিনিট। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন নায়ক জবি জাস্টিন জটলার মধ্যে থেকে গোল করে দলকে ২-১ এগিয়ে দেন। তবে নির্ধারিত সময়ের পর আরও আট মিনিট পেয়েও ইস্টবেঙ্গল আর গোল দিতে পারল না! উল্টে লুকা মায়েসেনের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়! ডার্বি জিতে কি ইস্টবেঙ্গল কোথাও বাড়তি আত্মবিশ্বাসী হয়ে গিয়েছিল! এই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাবে। তারকাখচিত ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ধারে ভারে অনেকটা পিছিয়ে থাকা ডায়মন্ড হারবার যে ফুটবল খেলল। তার তারিফ করতেই হবে। তারা যেন আজ ‘জায়ান্ট কিলার’।