জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদবের নেতৃত্বে জমি শনাক্তকরণ ও নির্মাণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত
জনসংযোগ শিলচর, ২১ আগস্ট :- আসাম সরকারের কল্যাণমূলক উদ্যোগে কাছাড় জেলায় শুরু হতে চলেছে এক নতুন অধ্যায়। চা শ্রমিক সমাজের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে চালু হওয়া চা শ্রমিক আশ্রয় যোজনা (CSAY) এখন দ্রুত বাস্তবায়নের পথে। বিশ্রামাগার ও শৌচাগার নির্মাণের এই প্রকল্প শ্রমিকদের কর্মপরিবেশে গুণগত পরিবর্তন আনবে বলেই আশাবাদী প্রশাসন। কাছাড় জেলা প্রশাসনের সক্রিয় পদক্ষেপের ফলে প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই বিশেষ গতি পেয়েছে এবং সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছে।

মঙ্গলবার জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব, আইএএস, জেলা আয়ুক্তের কার্যালয়ের নবনির্মিত সম্মেলন কক্ষে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সহকারী আয়ুক্তদ্বয়, নেইহাট হাওলাই, এ সি এস, বহ্নিখা চেতিয়া, এ সি এস, সদর চক্র আধিকারিক, অরুণজ্যোতি দাস, এ এল আর এস, উধারবন্দের চক্র আধিকারিক, ঋতুরাজ বরদোলই, এ এল আর এস সহ প্রশাসনের অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকরা। বৈঠকে প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয় এবং বিশেষ জোর দেওয়া হয় চা বাগান এলাকায় জমি চিহ্নিতকরণ ও দ্রুত নির্মাণকাজ শুরু করার ওপর। জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব বৈঠকে বলেন, “চা শ্রমিক আশ্রয় যোজনা শ্রমিক কল্যাণের এক নতুন সূচনা। সরকারের এই উদ্যোগ দীর্ঘদিনের এক চাহিদা পূরণ করবে। জেলা প্রশাসন গুণগত মান বজায় রেখে সময়মতো প্রকল্প সম্পন্ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
উল্লেখ্য , প্রতিটি বিশ্রামাগার নির্মাণে প্রায় ৫.১৬ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। বাগানের আয়তন অনুযায়ী বিশ্রামাগারের সংখ্যা নির্ধারিত হবে,৫০০ হেক্টর পর্যন্ত বাগানে একটি, ৫০০ থেকে ৭০০ হেক্টরের মধ্যে দুটি, আর ৭০০ হেক্টরের বেশি আয়তনের বাগানে তিনটি বিশ্রামাগার। প্রতিটি বিশ্রামাগার হবে শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামের জায়গা, যেখানে থাকবে পরিচ্ছন্ন শৌচাগারের ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকদের যেসব মৌলিক সুবিধার অভাব ছিল, এই প্রকল্প সেই শূন্যস্থান পূরণ করবে।

বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য,কাছাড় জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই নির্মাণ কমিটি গঠন করেছে এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা প্রায় সম্পূর্ণ। এর ফলে রাজ্য সরকার থেকে দ্রুত অর্থ স্থানান্তর সম্ভব হবে এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ এড়ানো যাবে। আধিকারিকগন আশা প্রকাশ করেছেন, কাছাড় হবে আসামের প্রথম দিকের জেলাগুলির একটি, যেখানে এই প্রকল্প উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করবে।
চা শিল্প কাছাড়ের অর্থনীতির এক প্রধান স্তম্ভ। জেলার বিস্তীর্ণ বাগানে কাজ করেন হাজার হাজার শ্রমিক, যাদের শ্রমের ওপর নির্ভর করেই দাঁড়িয়ে আছে এই শিল্প। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত শ্রমিকদের বিশ্রামাগার ও স্বাস্থ্যসম্মত অবকাঠামোর অভাব প্রকট ছিল। আসাম সরকারের এই উদ্যোগ শুধু তাদের কর্মপরিবেশ উন্নত করবে না, বরং মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের পথও সুগম করবে।

প্রশাসন বিশ্বাস করে, এই প্রকল্প সফল হলে তা হবে শ্রমিক কল্যাণে সরকারের আন্তরিকতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। বিশ্রামাগারগুলো দাঁড়িয়ে থাকবে সরকারের তৃণমূল স্তরে পৌঁছনো কল্যাণনীতির প্রতীক হিসেবে। জেলা প্রশাসনের দৃঢ় অঙ্গীকার এবং সক্রিয় তদারকিই এই প্রকল্পকে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দেবে।
সামাজিক মহলও প্রশাসনের এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে। চা শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে সরকারের আন্তরিক ভূমিকা কেবল শ্রমিক সমাজকেই নয়, সমগ্র জেলাকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তা কাছাড় জেলাকে শ্রমিক কল্যাণের এক আদর্শ জেলায় পরিণত করবে।