গৌহাটিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন কাছাড়ের ৫০ জন গুণীজন!
জনসংযোগ শিলচর, ০৯ আগস্ট :- ভারতরত্ন, গানের জাদুকর, সুরের সাধক, কবি, চলচ্চিত্রকার এবং মানবতার দূত ড. ভূপেন হাজরিকার জন্মশতবর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে সমগ্র অসম এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য। রাজ্যজুড়ে চলবে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি, যার সূচনা হবে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ – এ, গৌহাটির এক বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এই মহাযজ্ঞে উপস্থিত থাকবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে, যা অনুষ্ঠানটিকে দেবে এক অনন্য মর্যাদা ও জাতীয় গুরুত্ব।
শুধু আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়, বরং এই শতবর্ষকে মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার এক ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এমন মানুষদের চিহ্নিত করতে যাঁরা ড. ভূপেন হাজরিকার সঙ্গে জীবদ্দশায় সরাসরি সাক্ষাৎ বা আলাপচারিতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, অথবা তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছে কোনও মূল্যবান স্মৃতি। তাঁদেরকেই এই ঐতিহাসিক সূচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

কাছাড় জেলা থেকে মনোনীত করা হবে ৫০ জন বিশিষ্ট নাগরিক, সংস্কৃতিকর্মী, সাহিত্যিক, সমাজসেবী, শিল্পী এবং জীবনের নানা ক্ষেত্রের প্রতিনিধিরা যাঁরা প্রত্যেকেই কখনও না কখনও তাঁর সান্নিধ্যে এসেছেন বা তাঁর কাজের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। তাঁদের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেবল আনুষ্ঠানিকতার গণ্ডি পেরিয়ে, এক জীবন্ত ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে উঠবে।
উদযাপনকে সফল করতে আগামী ১১ আগস্ট, সোমবার, বিকেল ৩টায় কাছাড় জেলা আয়ুক্তের কার্যালয়ের নবনির্মিত সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে এক গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা বৈঠক। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জেলার সেইসব বিশিষ্ট নাগরিকদের, যাঁরা ড. হাজরিকার সঙ্গে ব্যক্তিগত মুহূর্ত ভাগ করেছেন। প্রশাসন স্পষ্ট করেছে, যদি কাছাড় জেলার কোনও বাসিন্দা তাঁর সঙ্গে মূল্যবান সময় কাটিয়ে থাকেন, তাঁরা এই বৈঠকে এসে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতি শেয়ার করতে পারেন, যা শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে সংরক্ষিত হবে।
এদিন গৌহাটির অনুষ্ঠানে যোগদানের প্রস্তুতি এবং কর্মসূচি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবে যেমন সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, স্মৃতিচারণ সভা, প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শন এবং ড. হাজরিকার গানকে কেন্দ্র করে জনসম্পৃক্ত উদ্যোগ।
জেলা প্রশাসন, কাছাড় জেলার সর্বস্তরের জনসাধারণকে আহ্বান জানিয়ে বলেছে এই শতবর্ষ উদযাপনকে কেবল সাংস্কৃতিক কর্মসূচি হিসেবে নয়, বরং গৌরব ও ঐক্যের এক উৎসবে পরিণত করতেই এই প্রয়াস। ড. হাজরিকার অমর সৃষ্টি গান ও মানবতার বার্তা, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যে ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও ভালবাসার মন্ত্র জুগিয়েছে, সেই চেতনাকেই নতুনভাবে জাগ্রত করাই এই উদযাপনের মূল লক্ষ্য।