ডাঃ রাজেশ চৌধুরী, বিশিষ্ট চিকিৎসক আগরতলা: সৎসঙ্গ মানে কি? সন্ধায় কিছু ভক্ত একসাথে জড়ো হয়ে খোল-করতাল সহ তুমুল কীর্তন করা, উদ্দাম নৃত্য করা, সুন্দর সুন্দর মনমাতানো আলোচনা করা,প্রসাদ খেয়ে চলে আসা,- এই কি শুধু সৎসঙ্গ?
না সেটা নয়,- সৎসঙ্গ একটা জীবনশৈলী, সৎসঙ্গ এক নতুন জীবনের পথ চলা, সৎসঙ্গ এক বিল্পব, সৎসঙ্গ এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন।
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে রাতে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমি যা যা করি,- খাওয়া দাওয়া, পায়খানা-প্রস্রাব স্নান-বিশ্রাম, পোষাক পরিচ্ছদ, সকল কর্ম-চিন্তা-কথা-আচার সবকিছু আমার ইষ্টের মনোমত করে অভ্যাস করা, – সেটাই সৎসঙ্গ।
আমাদের জীবনের সকল কিছুতেই আমার প্রিয়পরমকে প্রতিষ্ঠা করে চলাই সৎসঙ্গ।
শুধু কথায়-লেখায় ঠাকুরের চর্চা করাই সৎসঙ্গ নয়। ব্যাক্তিজীবন – পরিবার জীবন ও সমাজজীবনে বাস্তবিকভাবে তাঁর আদর্শ মাথায় নিয়ে চলার অভ্যাসই সৎসঙ্গ৷
কথায় কাজে মিল রেখে অকপট জীবন যাপনই সৎসঙ্গ।
ব্যাক্তিস্বার্থ ও আত্মপ্রতিষ্ঠার ধান্ধা দূরে ঠেলে ইষ্টস্বার্থ ও ইষ্টপ্রতিষ্ঠার জন্য সাধনাই সৎসঙ্গ।
দূর্বলতাকে ত্যাগ করে তাঁর বলে বলীয়ান হয়ে উঠাই সৎসঙ্গ।
জীবনের সকল বাঁধা-সকল প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করে পরমানন্দে জীবনের পথে উদ্দাম গতিতে এগিয়ে যাওয়াই সৎসঙ্গ।
সকল প্রবৃত্তির বাঁধন ছিড়ে একমাত্র ইষ্ট ও আচার্য্যের জন্যে বেঁঁচে থাকাই সৎসঙ্গ।
ভিতরে-বাহিরে, প্রকাশ্যে-গোপনে-একান্তে তাঁকে মূখ্য করে চলাই সৎসঙ্গ।
আচার্য্যকে মাথায় নিয়ে, সর্বাবস্থায় তাঁর ইচ্ছা পূরনে রাজী থেকে, তাঁকে তুষ্ট করার সাধনায় রত থেকে ঠাকুরের পানে ছুটে চলা, জীবনের প্রতি ক্ষণে ঠাকুরকে অনুভব করাই সৎসঙ্গ।
হতাশা, দুঃখ, নিরাশা, অবসাদকে দূরে ঠেলে আশা, আনন্দ, শান্তি ও স্বস্তির পানে ছুটে চলাই সৎসঙ্গ।
হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, দ্বন্দ্বকে পরিত্যাগ করে প্রেম, ভালবাসা, সহানুভূতি, সেবাপ্রানতাকে আলিঙ্গন করাই সৎসঙ্গ।
বাঁধাকে বাধ্য করে বৃদ্ধির পানে ছুটে চলা, মৃত্যুকে অবলুপ্ত করে স্মৃতিবাহী চেতনা লাভের সাধনাই সৎসঙ্গ।