লক্ষাধিক ভক্তের আনাগোনায় ভূবন তীর্থ যেন কৈলাশে পরিণত
যুব বিচিত্রা প্রতিনিধি, শিলচর,২৬ ফেব্রুয়ারি: চারিদিকে মেলার আসর, দূর দূরান্ত থেকে এসেছে সাধূ সন্তরা, এক অনন্য ভূমিতে পরিণত হয়েছে ভূবন তীর্থ ।
কাছাড় জেলা প্রশাসনের সক্রিয় উদ্যোগ ছিল লক্ষণীয়,
স্বাস্থ্য- আবগারি- পুলিশের কঠোর প্রচেষ্টায় নির্বিঘ্নে পূজার্চনা।
কাছাড় জেলার সোনাই বিধানসভা সমষ্টির এক উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত শিব মন্দির,সেই পাহাড়টির নাম ভূবন পাহাড়,আর এখানে প্রতিবছর মহা শিব চতুর্দশী ঘিরে ব্যতিক্রমী আয়োজন হয়ে থাকে এবার ও তাঁর কোনো খামতি নেই । প্রতিবারের ন্যায় এবারও লক্ষাধিক ভক্তের আনাগোনায় ভূবন তীর্থ যেন কৈলাশে পরিণত হয়েছে। বরাক উপত্যকার অন্যতম প্রাচীন এক ঐতিহ্য বললে ভুল হবে না। আজ ও সেই পাহাড়ের চূড়ায় বরাক উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুদিন আগে পায়ে হেঁটে ই রওয়ানা দেয় অনেকে। এমনকি এই ভূবন তীর্থ ভ্রমণে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা ও হয়েছে।
বরাক উপত্যকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় শিবস্থান হল ভুবন তীর্থ। শিলচর শহর থেকে নূন্যতম ১০০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত সেই ভূবন তীর্থ
আজ পূণ্য শিব চতুর্দশী বুধবার সকাল ৯.৪২ মিনিটে শুরু হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৮.৩১ মিনিটে শেষ হবে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে।
এই শুভ লগ্নে মা বোনেরা আবাল বৃদ্ধ বণিতা সকলেই দেবাদিদেব মহাদেব এর পূজার্চনা করে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, ভূবন তীর্থে দূর দূরান্ত থেকে যাওয়া ভক্তদের উদ্দেশ্যে সচেতন যুবকরা ব্যক্তিগত ভাবে খিচুড়ি প্রসাদের আয়োজন করে অনেকের মুখে হাঁসি ফুটাতে দেখা যায়।
দূর দূরান্ত থেকে আসা ভক্তরা প্রায় ১৫/১৬ ঘন্টা র পথ পায়ে হেঁটে মহাদেব এর মাথায় ফুল বিল্বপত্র ছড়ানোর পাশাপাশি পূজার্চনা করে আশীষ নেন। আর সেই ভক্তদের ফিরে যাবার সময় এই খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ কতটুকু মনোবল বৃদ্ধি করেছে একমাত্র যাঁরা সেই খিচুড়ি প্রসাদ গ্রহণ করেছে তাঁরা ই বলতে পারবে
অন্যদিকে, কাছাড় জেলা আবগারি বিভাগের যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকায় ভূবন তীর্থের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রবেশ দ্বারে চেকপোস্ট বসিয়ে ভক্তদের কাছ থেকে নেশাজাতীয় দ্রব্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য মাদক, বিড়ি সিগারেট , দেশলাই সহ সন্দেহজনক সামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে জেলা আবগারি বিভাগ।
আবগারি বিভাগ প্রতিবার ই ভূবন তীর্থে নেশাজাতীয় দ্রব্য নিয়ে প্রবেশ করতে বাধা আরোপ করে,যা এবার ও করেছেন। মূল কথাই ধর্মীয় পূজার্চনা শান্তি শৃঙ্খলার মধ্যে যাতে সুসম্পন্ন হয় সেইদিকে চোখ রেখেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে কাছাড় জেলা প্রশাসন।
পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন বিভাগ সহ কাছাড় জেলা আবগারি বিভাগের ভূমিকা ছিল অসাধারণ।
সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন সহ স্থানীয় জনগণ।