কাছাড় জেলা আয়ুক্তের উদ্যোগে অক্টোবরের মধ্যে নিখুঁত রেশন কার্ড বিতরণের লক্ষ্যে প্রস্তুতি

ই-কেওয়াইসি, প্রযুক্তি নির্ভরতা ও সময়মতো সরবরাহে জোর দিয়ে মানুষের মর্যাদা রক্ষায় নতুন পদ্ধতির সূচনা করলো জেলা প্রশাসন

জনসংযোগ শিলচর, ০৬ আগস্টঃ : সাধারণ মানুষের স্বার্থে জনসেবামূলক রেশন বিতরণ ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে কাছাড় জেলা প্রশাসন। আগামী অক্টোবর থেকে নির্ধারিত পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে নন-সাবসিডি মডেলে ন্যায্য মূল্যের দোকান (FPS)-এর মাধ্যমে মৌলিক পণ্য যেমন মসুর ডাল, চিনি ও লবণ বিতরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের নেতৃত্বে রয়েছেন কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত, মৃদুল যাদব, (আইএএস) যিনি মঙ্গলবার এক সমন্বয় সভায় এই পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন জিপিএসএস (গাঁও পঞ্চায়েত সমবায় সমিতি)-এর সচিব, ন্যায্য মূল্যের দোকানের মালিকগন এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা। সভায় জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব পরিষ্কারভাবে বলেন, “এই উদ্যোগের সফলতা নির্ভর করছে আমাদের সিস্টেমকে নিখুঁত করে তোলার উপর। ত্রুটি দূর করে জনসেবাকে প্রাধান্য দিতে হবে।” তিনি সকল স্তরের কর্মীদের সমন্বয় ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ই-কে ওয়াই সি (eKYC)-এর সমস্যাগুলির সমাধানে। বহু উপভোক্তার আধার ও রেশন কার্ডের তথ্য মিল না থাকায় যাচাই সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। এই সমস্যা দূর করতে ৭ই আগস্ট ন্যায্য মূল্যের দোকান চালকদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে যাতে তারা উপভোক্তাদের সরাসরি সহায়তা করতে পারেন।

জেলা আয়ুক্ত নির্দেশ দেন, প্রতিটি FPS-এ ই-পস (ePOS) মেশিন যেন সঠিকভাবে কাজ করে এবং সমবায়ভিত্তিক ই-কে ওয়াই সি আপলোডের উপর কড়া নজর রাখা হবে। কোনো দোকান সময়মতো তথ্য আপলোড করতে ব্যর্থ হলে তদন্ত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভা আগামী ৮ই আগস্ট সকাল ১০টায়, শিলচরের ‘আশীর্বাদ ভবন’-এ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সকল নায্য দ্রব্য মূল্যের দোকানের মালিকগন ও জিপিএসএস সচিবদের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক।

অন্যদিকে, প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫ হাজার উপভোক্তার দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলির সমাধানে কাজ শুরু করেছে। অনলাইন ত্রুটির কারণে এই উপভোক্তারা বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করতে পারেননি। প্রযুক্তিগত দল এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে তৎপর। এছাড়াও ক্যান্সার রোগীদের আবেদন এবং রেশন কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্তি বা বর্জনের অনুরোধগুলি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিবেচনা করা হবে।

জেলা আয়ুক্ত আরও বলেন, “এটা শুধু সামগ্রী বিতরণ নয়, বরং জনগণের আস্থা ফেরানোর একটি প্রচেষ্টা। আমরা এমন একটি পদ্ধতি তৈরি করতে চাই যেখানে জনগণ জানবেন যে, তাদের প্রাপ্য তারা সসময়ে, সন্মানের সঙ্গে পেয়ে যাবেন।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপুরের সম -জেলা আয়ুক্ত, ধ্রুবজ্যোতি পাঠক, (এ.সি.এস.), সহকারী আয়ুক্ত, শ্রীমতী বহ্নিখা চেতিয়া, এ.সি.এস.এবং অন্যান্য বিভাগীয় আধিকারিকগন।

জনসাধারণের কল্যাণে প্রযুক্তিনির্ভর স্বচ্ছতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাছাড় জেলা এবার রেশন বিতরণ ব্যবস্থার এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে, যা ভবিষ্যতে গোটা রাজ্যের জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ জেলা হয়ে উঠতে পারে।